বিয়ে হয়েছে আজ থেকে ৭০ বছর আগে। তিন মেয়ে, ছয় নাতি-নাতনি আর ১২ পুতিনকে নিয়ে এখন ব্রিটেনের পিটারবুর্গের ছোট্ট একটি শহরে জ্যাক-মিলির সাত দশকের সংসার। বিয়ের পর থেকে প্রতিটি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকালে ঘুম থেকে উঠেই জ্যাক এক গুচ্ছ গোলাপ তুলে দিত মিলির হাতে। এ পর্যন্ত একটা সপ্তাহও ফুলছাড়া কাটেনি মিলির। ৮৯ বছরের জ্যাক এ সপ্তাহে ৮৮ বছরের মিলির হাতে তুলে দেন তাদের বিবাহিত জীবনের ৩০০০তম ফুলের তোড়াটি। হাঁটু গেড়ে বসে ফুলের তোড়াটি মিলির হাতে দিয়ে জ্যাক বলেন, ‘আমি নিজের বিবাহিত জীবনের ৭০ বছরে আছি, তোমার মতো একজন মানুষের সঙ্গে! এটা তো ভাবতেই গর্ববোধ করি। আজ পর্যন্ত আমি একদিন আমাদের বিবাহিত জীবন নিয়ে আফসোস করিনি। তুমি আমার জীবনের আশীর্বাদ স্বরূপ। এ হদয়স্পর্শী বাণীর পর পুরো পরিবার করতালি দিয়ে তাদের অভিনন্দন জানান। এরপর জ্যাক কথা বলেন ডেইলি মেইলের সঙ্গে। তিনি ডেইলি মেইলকে তাদের পরিচয় এবং বিয়ের কাহিনী জানান। জ্যাক বলেন, ‘আমাদের প্রথম দেখা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপর। তখন আমার বয়স ১৮, আর মিলির ১৭। মিলিকে প্রথম দেখেই তার প্রেমে পড়ে যাই। তবে আমি একা নই। আমার সঙ্গে আমার এক বন্ধুও মিলির প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন আমরা দুই বন্ধু একটি পয়সা নিয়ে বাতাসে ছুড়ে মারি। যখন তা মাটিতে এসে পড়ে, দেখতে পাই মিলি শুধু আমার ভাগ্যেই লেখা। এরপর আর কী, মিলির সঙ্গে প্রথম ডেটে গেলাম সঙ্গে নিলাম একটা গোলাপের তোড়া। ফুলের তোড়া পেয়ে মিলির সেই হাসি আমি কোনোদিন ভুলব না। এ জন্যই তার পর থেকে প্রতি সপ্তাহে সেই হাসিটা দেখার জন্যই এখনও তার হাতে তুলে দেই গোলাপের তোড়া। আর সে-ও আমাকে নিরাশ করে না। মিলি এ ‘ফুলের তোড়া’র স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘এটা শুধু ভালোবাসার প্রতীকই নয়, এটা আমাদের দীর্ঘ সংসার জীবন এবং দীর্ঘায়ুরও একটি কারণ। এ ফুলের তোড়ার কারণেই আজ আমরা এ বয়সে এসেও এতটা সুখী এবং প্রাণবন্ত। জীবনে এমন সময়ও গেছে, যে ফুল তো দূরের কথা একবেলা খাবার কেনার পয়সাও ছিল না আমাদের। কিন্তু তবুও জ্যাক হাল ছাড়েনি। রাস্তার কাগজ কুড়িয়ে, ওই কাগজ দিয়ে ফুল বানিয়ে আমার হাতে তুলে দিয়েছে। এর চেয়ে বেশি আর কী চাই জীবনে?
0 comments:
Post a Comment