Number of innovations would we stay on this site soon --- Number of innovations would we stay on this site soon.

Thursday, February 2, 2012

হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার চিরচেনা পক্ষীকুল



মানুষের নির্মম অত্যাচার, খাদ্য সংকট এবং পরিবেশ বিপর্যয়সহ নানা প্রতিকূল অবস্থার কারণে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশী পাখি। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য সাগর, নদী, পাহাড়, বিশাল সমতলভূমি দখল, নানা বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার বনাঞ্চল উজাড়করণকে দায়ী করেছেন। পাখি বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা যায়, পাখি শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্যবর্ধকই নয়, প্রকৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশও। ফসলে ভাগ বসিয়ে পাখি মানুষের যেটুকু ক্ষতি করে, উপকার করে তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি। যে পরিবেশে পরিযায়ী পাখি থাকে, সে পরিবেশ ভালো থাকে। অর্থাৎ পাখির উপস্থিতি প্রমাণ করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় আছে। পাখির বিষ্ঠা কৃষিজমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে, মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর খাবার হিসেবে ব্যবহƒ হয়। পাখি ক্ষতিকর জলজ উদ্ভিদ বীজ খেয়ে কৃষকের উপকার করে এবং কীটপতঙ্গ খেয়ে কৃষি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শহিদুল হক কাজল জানান, অঞ্চল বা পরিবেশভেদে বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখা যায়। এদের মধ্যে কিছু পাখি আবার পরিযায়ী। আমাদের দেশে এসব পাখি বাইরে থেকে আসে বলে আমরা এদেরঅতিথিবলে থাকি। আসলে এরা অতিথি নয়, আমাদের পরিবারেরই একটি অংশ। শুধু মাঝে মাঝে দেশের বাইরে অবস্থান করে। প্রতি বছর শীত মৌসুমে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে শীতপ্রধান দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির দল বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আসে, আবার শীত শেষে একইভাবে দেশান্তরি হয়। খাদ্যের অভাব পরিবেশের পরিবর্তনের কারণে পাখিরা ঝুঁকি নিয়ে দেশান্তরি হয়। কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতর সূত্র জানায়, বাংলাদেশে ৬৫০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ প্রজাতিই পরিযায়ী। এদের মধ্যে আট প্রজাতির পাখি গ্রীষ্মে দেশে থাকে, শীতে চলে যায়। বাকি ২৯২ প্রজাতির পাখি শীতে দেশে থাকে অথবা তার আগে-পরে স্বল্পসময়ের জন্য আসে। জুলাইয়ের শেষ এবং আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করে। তবে শীত মৌসুমে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত বেশির ভাগ পরিযায়ী পাখি বাংলাদেশে আসে। এর বেশির ভাগই বিভিন্ন রকমের হাঁস অন্যান্য জলচর প্রজাতি। যেমন ধলাকপাল রাজহাঁস, চখাচখি, পাতি তিলাহাঁস, টিকিহাঁস, কালাটুপি মাছরাঙা ইত্যাদি। নির্বিচারে পাহাড় কাটা, বনাঞ্চল উজাড়, সমুদ্রসৈকত, খাল-বিল-ঝিল, হাওর-বাঁওড় দখল ইত্যাদি কারণে এসব পাখি আজ দেশছাড়াপ্রায়। ভালো ফলনের জন্য জমিতে দেয়া হচ্ছে রাসায়নিক সার, পেস্টিসাইড, হার্বিসাইড, যা খাবারের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে এবং সর্বোপরি খাদ্যশৃংখলে ভারসাম্য নষ্ট করছে। প্রতি বছর পৃথিবীতে ৫০০ কোটি পাউন্ড কীটনাশক ছিটানো হয়। আমাদের দেশেও এর বিস্তার পাখিদের জন্য বিপজ্জনক। বিশেষজ্ঞরা জানান, পরিযায়ী পাখি আমাদের দেশেও এখন নিরাপদ নয়। মানুষের অজ্ঞতা অসচেতনতার ফলে দেশের পরিযায়ী পাখি আজ বিপদসংকুল। প্রতি বছর একশ্রেণীর মানুষের ভোগের জন্য চোরা শিকারিরা বিপুল পরিমাণ পাখি শিকার করে। ফলে দিন দিন বাংলাদেশে পাখির আগমন কমে যাচ্ছে। পৃথিবীর বুক থেকে পাখি যাতে হারিয়ে না যায়, সে জন্য সব দেশেই পাখি সংরক্ষণের ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আর জন্য দরকার সুদূরপ্রসারী মহাপরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন

0 comments:

Post a Comment